হতাশ করলেন ইমরুল

হতাশ করলেন ইমরুল

• ৭১৩ : বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্টে যে কোনো দলের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ইনিংস।
• ‎১৯৯ দশমিক ৩ : টেস্টে বাংলাদেশের বিপক্ষে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ওভার খেলার রেকর্ড।
• ‎এক ইনিংসে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ওভার বোলিং করার রেকর্ড করলেন তাইজুল। ৬৭.৩ ওভার বল করেছেন তিনি।
• ‎২১৯ : এক ইনিংসে বাংলাদেশের কোনো বোলারের দেয়া সর্বোচ্চ রান। বোলার : তাইজুল ইসলাম।

দিন শেষে স্কোর : বাংলাদেশ ৫১৩, ৮১/৩; শ্রীলংকা ৭১৩/৯ ডি.

প্রথম সেশন

তিন উইকেটে ৫০৯ রান নিয়ে চতুর্থ দিনের খেলা শুরু করে শ্রীলংকা। প্রথম থেকেই বেশ স্বাচ্ছন্দ্যের সঙ্গে খেলতে দেখা গেছে গত দিনের দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যান রোশান ও চান্দিমাল-কে। সকালের শুরুতেই তাইজুলকে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে ঠেলে দিয়ে টেস্টে নিজের প্রথম সেঞ্চুরিটি তুলে নেন রোশান। বাকিটা সময় বাংলাদেশের নির্বিষ স্পিনকে বেশ সহজেই মোকাবেলা করতে দেখা গেছে ওই দুই ব্যাটম্যানকে। ইনিংসের ১৫৬ম ওভারে আসে সেশনের প্রথম উইকেটটি। মিরাজের বলে কাট করতে গিয়ে লিটনের গ্লাভসে ধরা পড়ে থামে রোশান-এর ১০৯ রানের ইনিংসটি। ২৩০ বলের মোকাবেলায় ৬টি চার ও ১টি ছয়ের সাহায্যে ওই রান করেন তিনি। ভাঙে ১৩৫ রানের জুটি। লাঞ্চের আগ পর্যন্ত ডিকেওয়ালা-কে নিয়ে দেখে-শুনেই ব্যাট করছিলেন চান্দিমাল। লাঞ্চের ঠিক আগ মুহূর্তে খোলস ছেড়ে বের হয়ে আসার সিদ্ধান্ত নেন ডিকেওয়ালা। তাইজুলের করা ওভারে পর পর মারেন ৩টি চার।

প্রথম সেশন শেষে স্কোর : বাংলাদেশ ৫১৩, শ্রীলংকা ৬১২/৪

সেশন হিরো : দিনেশ চান্দিমাল

দ্বিতীয় সেশন

পুরো ইনিংসে বাংলাদেশের বোলারদের একমাত্র সফল সেশন এটি। সেঞ্চুরির প্রত্যাশা নিয়ে দ্বিতীয় সেশনে ব্যাট করতে নামা চান্দিমালকে প্রথম ওভারেই ফেরত পাঠান তাইজুল। তাইজুলের আর্ম বলে বোকা বনে চান্দিমাল বোল্ড হয়ে ফেরেন ৮৭ রানে। চান্দিমাল-এর আউটের পর চুটিয়ে খেলতে শুরু করেন ডিকেওয়ালা। দ্রুতগতিতেই তুলে নেন নিজের অর্ধশতক। এরপর আর বেশিদূর এগেতে পারেননি তিনি। মিরাজের নিরীহ একটি বলে রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে লিটনের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন তিনি। ওয়ানডে স্টাইলে খেলা ৬১ বলে ৬২ রানের ইনিংসটিতে রয়েছে ৯টি চারের মার। তারপর হেরাথ-পেরেরা জুটি হতাশা বাড়াতে থাকে বাংলাদেশের। তাদের ওই জুটি হতাশা আরো বাড়ানোর আগে আঘাত হানেন সানজামুল। পেরেরা-কে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলে তুলে নেন টেস্টে তার প্রথম উইকেট। রিভিও নিলেও শেষ রক্ষা হয়নি পেরেরা-র। ফিরে যান ৩২ রানে। এরপর আর সেশনে কোনো উইকেট আসেনি। মিরাজের বলে সুইপ করে হেরাথ একটি রান নিয়ে শ্রীলংকাকে তোলেন ৭০০ রানের শৃংগে। এখানেই শ্রীলংকা ইনিংস ঘোষণা করবে- সাধারণে এমন ভাবনা থাকলেও ওই পথে হাঁটেননি চান্দিমাল।

দ্বিতীয় সেশন শেষে স্কোর : বাংলাদেশ ৫১৩, শ্রীলংকা ৭০৫/৭

সেশন হিরো : নিরোশান ডিকেওয়ালা

তৃতীয় সেশন

সবাইকে অবাক করে দিয়ে চা-পানের বিরতির পরও ব্যাট করতে নামে শ্রীলংকা। অবশ্য খুব বেশিক্ষণ তারা ব্যাট করেননি। লিড ২০০ হওয়ার পর হেরাথ-এর বিদায়ের সঙ্গে সঙ্গেই ইনিংস ঘোষণা করেন লংকান দলপতি চান্দিমাল। এই সেশনে পতন হওয়া দুটি উইকেটেরই মালিক তাইজুল। লকমল ও হেরাথেরসহ ইনিংসে তার শিকার ৪ উইকেট। দ্বিতীয় ইনিংসে ২০০ রানে পিছিয়ে থেকে ব্যাটিংয়ে নামা বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা মাটি আঁকড়ে থেকে দিনটি শেষ করবেন- এমন আশাই ছিল সবার। কিন্তু ওই আশা নিরাশায় রূপ নেয় দ্রুতই। রক্ষণাত্মক খেলার বদলে আক্রণাত্মক ব্যাটই করতে থাকেন তামিম-ইমরুল। ম্যাচে ইমরুলের ভূমিকা নিয়ে কিছু কথা বলাই যায়। প্রথম ইনিংসে ৪০ করলেও তার পিচ্ছিল হাতের সুবিধা নিয়ে লংকানরা গড়েছেন রানের পাহাড়। আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা সম্পন্ন কোনো খেলোয়াড়ের কাছ থেকে এমন ফিল্ডিং অপ্রত্যাশিত ও অগ্রহণযোগ্য। ফিল্ডিংয়ে তার নৈপুণ্যের! সহায়তায় লংকানরা যে রানের পাহাড় গড়লো এর বিন্দুমাত্র অনুশোচনা বোধ তার খেলায় দেখা যায়নি। বরং সবাইকে অবাক করে রঙ্গনা হেরাথ-কে এগিয়ে এসে মেরেছেন ছয়। টেস্ট যে ছেলেমানুষির জায়গা নয় ওই শিক্ষাটি তাকে বেশ ভালোই দিয়েছেন পেরেরা। আপনি যখন ২০০ রানে পিছিয়ে ব্যাটিংয়ে নেমেছেন এবং ড্র করার জন্য ব্যাটে লাগাম পরানো উচিত তখন সেখানে ইমরুল উইকেট উপহার দিয়ে এলেন সুইপ শট খেলতে গিয়ে। ঠিক কোন ভাবনা এমন সময় সুইপ খেলতে কাউকে প্রলুব্ধ করে তা ব্যাখ্যার দাবি রাখে! ইমরুলের বিদায়ের পর ব্যাটিংয়ে নামেন প্রথম ইনিংসের সেঞ্চুরিয়ান মুমিনুল। আশা ছিল তামিম-মুমিনুলেই দিন শেষ করবে বাংলাদেশ। কিন্তু এবার হতাশ করলেন তামিম। বেশকিছু চমৎকার শট খেলা উইকেটের বাইরের একটি বলে খোঁচা মেরে তিনি ফিরলেন ৪১ রান করে। সিঁদুরে ততোক্ষণে শঙ্কার মেঘ। আম্পায়ারদের সিদ্ধান্তে নির্ধারিত ওভারের চেয়ে এক ওভার বেশি খেলতে বাধ্য হয় বাংলাদেশ। আর ওই ওভারেই হেরাথের বলে মেন্ডিস-এর হাতে ক্যাচ দিয়ে শঙ্কার ষোলাে কলা পূর্ণ করেন তিনি। লংকানদের আবেদনে আম্পায়ার সাড়া না দিলে রিভিও নেন চান্দিমাল। এতেই আসে কাঙ্ক্ষিত সাফল্য।

তৃতীয় সেশন শেষে স্কোর : বাংলাদেশ ৫১৩, ৮১/; শ্রীলংকা ৭১৭/৯ ডি.

সেশন হিরো : সান্দাকান

সেশন ভিইলেন : ইমরুল কায়েস