রাস্তায় হাটতে হাটতে কোনো মেয়ের দিকে শিস বাজালে বা ফোন নাম্বার চাইলে কি শাস্তি হতে পারে? ছেলেরা হয়তো ভাবছেন এর আবার শাস্তি কিসের! আমাদের দেশে আপনি সহজেই পার পেয়ে যাবেন হয়তো। কিন্ত কি হবে যদি আপনি ফ্রান্সের রাস্তায় কোনো মেয়ের সাথে এই কাজ করেন? ফরাসিদেশের কোথাও এই কাজ করলে ৩৫০ ইউরো পর্যন্ত জরিমানা দিতে হতে পারে আপনারা!
ফ্রান্সের নারীবাদী রাজনীতিবিদ মারলিন শিয়াপ্পা কর্তৃক গঠিত একটি সংসদীয় দল এই প্রস্তাবনা উপস্থাপন করেন সরকারের নিকট। যে সকল পুরুষ রাস্তায় নারীদের উত্ত্যক্ত করবে তাদের প্রাথমিক জরিমানা হবে ৯০ ইউরো এবং যদি কারো জরিমানা দেওয়ার সামর্থ্য না থাকে তাহলে পরবর্তীতে জরিমানা বেড়ে ৩৫০ ইউরো পর্যন্ত হতে পারে। শীঘ্রই এই রিপোর্টটা বিচার বিভাগের সামনে উপস্থাপন করা হবে।
৩৪ বছর বয়সী নারীবাদী মারলিন শিয়াপ্পা ২০১৭ সালে এই আইন কার্যকর করার কথা বলেন কারণ রাস্তায় উত্তক্ত করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এই প্রস্তাবনা এখনো প্রক্রিয়াধীন। আইন পাশ হলেও এর প্রণয়ন করা একটু জটিল হবে কারণ কি কি মন্তব্য করলে বুঝবেন যে আপনাকে হয়রানি করা হবে সেটা খুব একটা পরিষ্কার না। ফরাসি একটি দৈনিক ‘ওয়েস্টফ্রান্স’ এর মতে, কোনো নারীর ফোন নাম্বার চাওয়া, দেখে শিস দেয়া বা তার বেশভূষা দেখে বাজে মন্তব্য করা এসবই শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে বিবেচ্য। এই কাজগুলো শাস্তিযোগ্য কারণ এগুলো যৌন-নিপীড়নের হাতেখড়ি। এবং যৌন-নিপীড়ন ফৌজদারি আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
ফ্রান্সের ‘হাই কাউন্সিল ফর ইকুয়ালিটি বিটুইন ওমেন এন্ড ম্যান’র তথ্যানুসারে প্রায় সকল নারী কমপক্ষে একবার হলেও রাস্তায় অথবা সাধারণ পরিবহনে উত্যক্তের স্বীকার হয়েছেন এবং উল্লেখযোগ্যভাবে এদের মধ্যে ৮২ শতাংশের বয়সই ১৮ এর কম।
মারলিন শিয়াপ্পা আশাবাদী এই বছর থেকেই এই আইন কার্যকর হবে। যদিও তার মতে জরিমানা অনেক কম হয়ে গেছে। যদিও ফরাসি মিডিয়া প্রশ্ন করে, ‘ফ্লার্টিং’ কে কিভাবে উত্যক্ত করা থেকে আলাদা করবে? যেহেতু ফ্লার্ট করা এবং উত্যক্ত করা এক বিষয় না।
উল্লেখ্য যে বিশ্বব্যাপী ‘হ্যাশট্যাগ মি টু’ (#metoo) আন্দোলন জোরালোভাবে চললেও ফরাসি অনেক সেলিব্রেটিই এই আন্দোলনের বিপক্ষে কথা বলেছেন। তবে যৌন নিপীড়ন কমাতে এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানানোই উচিৎ তবে দেখার বিষয় এটা কার্যকর হয় কি না। কার্যকর করতে গিয়ে এর মানদন্ডটাই বা কি হবে আসলে উত্যক্ত করা হয়েছে কি না। কারণ সব মন্তব্যই তো আর বাজে মন্তব্য না।