সা’দ কান্ধলভীকে নিয়ে তাবলীগে সংকটের সূত্রপাত ও বর্তমান অবস্থা

সা’দ কান্ধলভীকে নিয়ে তাবলীগে সংকটের সূত্রপাত ও বর্তমান অবস্থা

তাবলীগ জামাতের বিশ্ব মারকায হল দিল্লির ‘নিজামুদ্দিন মারকায’। ঐতিহ্য অনুযায়ী নিজামুদ্দিন মারকাযের আমিরকেই বিশ্ব তাবলীগের আমির হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ২০১৪ সালে দিল্লির একটি হাসপাতালে তাবলিগ জামাতের আমির মাওলানা জোবায়েরুল হাসান মারা যাওয়ায় পর এর দায়িত্বে আছেন সম্প্রতি বিতর্কিত ব্যক্তিত্ব মাওলানা সা’দ কান্ধলভী। তিনি তাবলিগ জামাতের প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা ইলিয়াস কান্ধলভী রহ. এর পুত্র মাওলানা হারুন কান্ধলভী রহ. এর সন্তান।

দিল্লির নিজামুদ্দিনে প্রতিদিন বাদ ফজর তিনি বয়ান করে থাকেন। বেশ কিছুদিন ধরেই তার বক্তব্য নিয়ে নানা অসন্তোষ সৃষ্টি হয়, বিশেষত আলেমসমাজে। এরপর একে একে তার বক্তব্য নিয়ে বিতর্ক প্রবল হয়ে উঠে, যখন ভারতের শীর্ষ উলামাগণ তার ‘কুফরি কালাম’ থেকে সরে আসার আহ্বান জানান। উপমহাদেশের সর্বশ্রেষ্ঠ দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দারুল উলুম দেওবন্দ থেকে তার ব্যাপারে ফতোয়া দেওয়া হয়। তাতে সা’দকে ইজমার বিরুদ্ধে বক্তব্য প্রদান, কোরআনের মনগড়া ব্যাখ্যা এবং ইচ্ছেমত ভিত্তিহীন মনগড়া ফতোয়ার কতিপয় উল্লেখ করে রুজু করার আহ্বান জানানো হয়। মাজলিসুল উলামা থেকে দেওয়া ফতোয়ায় সা’দের ৬টি বক্তব্যকে ‘কুফরি’ হিসেবে উল্লেখ করে পূর্ণ ব্যাখ্যা প্রদান করা হয়। উল্লেখ্য, তাবলীগ জামাতের প্রতিষ্ঠা দেওবন্দী আলেমদের হাত ধরেই।

তার বিতর্কিত বক্তব্যের বিষয়ে দারুল উলুম দেওবন্দের তরফে দৃষ্টি আকর্ষণ করে নিজামুদ্দিনে চিঠি দেওয়া হয়। কিন্তু এতে প্রত্যাশামত ফল পাওয়া যায় নি। বরং মাওলানা সা’দ তার বক্তব্যের ধারা বজায় রাখেন। এ বিষয়ে প্রকাশ্যে প্রথম আলোচিত ঘটনা ছিল ২০১৬ সালের ডিসেম্বরের ২ তারিখে দারুল উলুম দেওবন্দের তরফে প্রতিষ্ঠানটির মুহতামিম মাওলানা আবুল কাসেম নোমানি, নদওয়াতুল উলামা’ লক্ষ্মৌর পক্ষে এর মুহতামিম মহাপরিচালক মাওলানা সাইয়্যিদ সালমান আহমদ নদভী এবং দিল্লির উলামাদের সর্বোচ্চ সংগঠন আইম্মা পরিষদের সভাপতি মুফতি ওয়াজাহাত কাসেমি যৌথ বিবৃত প্রদান করেন। এভাবে ভারতীয় আলেম-উলামাদের সা’দের বিভ্রান্তির ব্যাপারে ঐক্যমত্যের প্রকাশ। খোদ ভারতীয় গণ-মাধ্যমে সেসময় সা’দের বক্তব্য সমালোচিত হয়। সবচে’ সমালোচনার জন্ম দেয়, মক্কা, মদিনার পর দিল্লির নিজামুদ্দিনকে সর্বোচ্চ সম্মানীয় ও মান্য এবং আজমতসম্পন্ন দাবি করা। কিছু কিছু ভারতীয় গণমাধ্যম একে ‘সা’দের কুফরি কালাম’ বলে অভিহিত করে খবর প্রকাশ করে। সম্মিলিত সেই বিবৃতিতে সা’দকে তওবার আহ্বান জানানো হয়, সেইসব বক্তব্য থেকে সরে আসার আহ্বান জানানো হয়।

বিবৃতির পরও সা’দ কান্ধলভির পক্ষ থেকে কোনও সাড়া পাওয়া যায় নি। পূর্বের চিঠি চালাচালির মত এই প্রচেষ্টাও ব্যর্থ হয়। এরপর দারুল উলুম থেকে ফতোয়া প্রদান করা হয়। সেই ফতোয়ায় স্বাক্ষর করেন দারুল উলুম দেওবন্দের মুফতিয়ে আজম হাবিবুর রহমান খায়রাবাদী। দারুল উলুম দেওবন্দের মুহতামিম মাওলানা আবুল কাসেম নোমানী, চার মাজহাবের ফিকহে অত্যন্ত বিজ্ঞ বলে মান্য, শায়খুল হাদিস মুফতি সাঈদ আহমদ পালনপুরী, মাওলানা আবদুল খালেক সাম্ভলী, মাওলানা আবদুল খালেক মাদরাজী, মাওলানা নেয়ামত উল্লাহ আজমী প্রমূখ খ্যাতিমান আলেমসহ আরও অনেক আলেম।

ফতোয়া প্রকাশের পর মাওলানা সা’দ দেওবন্দে রুজু নামা (বক্তব্য প্রত্যাহারপূর্বক একই ধরণের বক্তব্য আর কখনও প্রদান না করার অঙ্গিকার) প্রদান করে। কিন্তু রুজু নামা যথাযথ প্রক্রিয়ায় না হওয়ায়, পূর্ণ রুজু না করায় মাওলানা সা’দের রুজু নামা দেওবন্দ প্রত্যাখ্যান করে। দেওবন্দ রুজুনামা লাভের কিছুদিন পরই মাওলানা সাহেবের কতিপয় ভক্তবৃন্দ বিশেষত মাওলানা সাহেবের নিকটাত্মীয় ও মাযাহেরে উলুম সাহারানপুরের নাযেম মাওলানা সালমান সাহেবের পক্ষ থেকে দারুল উলুম দেওবন্দের বক্তব্য খণ্ডন করে একটি পুস্তিকা প্রকাশ করে এবং তাদের খণ্ডনমূলক বক্তব্য এখনও অব্যাহত রয়েছে।

উপরন্তু মাওলানা সা’দকে দেওবন্দ থেকে বলা হয়েছিল যে, আল্লাহর পয়গাম্বর হযরত মুসা আ. সম্পর্কে ভুল ও অপবাদপূর্ণ বক্তব্য যেভাবে তিনি সর্বসাধারণের মাহফিলে দিয়েছেন, তেমনিভাবে সর্বসাধারণের মাহফিলে তিনি এ বক্তব্য প্রত্যাহারের ষোঘণা দিবেন। কিন্তু সা’দ সাহেব তা কখনই করেন নি।

সা’দ সাহেব সম্পর্কে দেওবন্দের অবস্থান জানতে বাংলাদেশ থেকে আলেমদের এবং কাকারাইলের শুরার সদস্যদের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে একটি প্রতিনিধি দল ভারত সফর করে, তারা দেওবন্দ, নিজামুদ্দিন, গুজরাট সফর করে। ওই প্রতিনিধি দলে ছিলেন, জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়ার মোহতামিম মাওলানা মাহফুজুল হক, জামিয়া মাদানিয়া বারিধারার মুহাদ্দিস মাওলানা উবায়দুল্লাহ ফারুক, কাকরাইলের শুরার পক্ষে ছিলেন মুরব্বি মাওলানা যুবায়ের আহমদ এবং সৈয়দ ওয়াসিফুল ইসলাম, কাকরাইলের তরফে আরও ছিলেন কারী মাওলানা যুবায়ের আহমদ ও মাওলানা জিয়া বিন কাসেম। প্রতিনিধি দলের কাছে দেওবন্দ লিখিত বক্তব্য প্রদান করে। প্রতিনিধি দল তাদের প্রতিবেদন সরকারের কাছে প্রদান করে। জানা যায়,দেওবন্দ এখনও মাওলানা সা‘দ কান্ধলবীর ওপর আস্থাশীল নয়৷ তাদের ভাষ্য, মাওলানা সা’দ আজ পর্যন্ত একবারও স্পষ্ট শব্দে রুজু করেন নি৷ দেওবন্দ তাকে প্রকাশ্যে ভুল স্বীকার করে ঘোষণা দিতে বলেছিল। আজ পর্যন্ত তা তিনি করেন নি।

এ ব্যাপারে বিতর্ক বছর জুড়ে আলোচিত বিষয় ছিল। বিশেষত ইজতেমার সময় এগিয়ে আসলে সে বিতর্ক নতুন করে প্রকট হয়। ইজতেমায় দিল্লির নিজামুদ্দিনের মুরব্বি মাওলানা সাদ কান্ধলভীর উপস্থিতি নিয়ে ০৬ জানুয়ারি রাজধানীর উত্তরার ১৪ নম্বর সেক্টরের ১১ নম্বর রোডের আয়েশা মসজিদে সারা দেশের উলামায়ে কেরামের নেতৃত্ব স্থানীয় ব্যাক্তিগণ পরামর্শ সভায় মিলিত হয়। এতে গুরুত্বপূর্ণ দুটি সিদ্ধান্ত নেয়া হয় সর্বসম্মতভাবে।

প্রথমত, দাওয়াত ও তাবলিগ একটি দীনি কাজ। দীনের একটি আহাম কাজ। সুতরাং, দীনের এই আহাম কাজের কোন বিশেষ মুরুব্বি, দারুল উলুম দেওবন্দের অনাস্থা নিয়ে প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে এই আমলি কাজের বিশেষ ভূমিকায় থাকতে পারেন না। অতএব, গত ২৪শে ডিসেম্বর বাংলাদেশ সরকারের পাঠানো প্রতিনিধি দলের কাছে দারুল উলুম দেওবন্দ আনুষ্ঠানিকভাবে মাওলানা সা’দের ব্যাপারে লিখিতভাবে অনাস্থাপত্র হস্তান্তর করায় আজকের এই সভা থেকে শীর্ষ ওলামা-মাশায়েখ ঐক্যবদ্ধ হয়ে মাওলানা সা’দের ব্যাপারে অনাস্থা প্রকাশ করছে।

দ্বিতীয়ত, ২৯শে ডিসেম্বর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহোদয়ের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বৈঠকে যে সিদ্ধান্তগুলো নেওয়া হয়েছিল আজকের এই শীর্ষ ওলামা-মাশায়েখ পরামর্শ সভা তা দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি জানায়।

একইদিনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আলেমদের ও তাবলীগের মুরুব্বিদের বৈঠক হয়। এ বৈঠকে ২১ জনের মধ্যে ১৩ জন এবারের ইজতেমায় মাওলানা সাদ না আসার পক্ষে মত দেন। এরা হলেন, বেফাকের সিনিয়র সহসভাপতি মাওলানা আশরাফ আলী, জামিয়া মাদানিয়া বারিধারার মুহাদ্দিস মাওলানা উবায়দুল্লাহ ফারুক, তাবলিগের শুরা সদস্য মাওলানা মোহাম্মাদ যোবায়ের, মাওলানা মুহাম্মাদ হোসাইন ও মাওলানা ফারুক, বেফাকের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মাওলানা আবদুল কুদ্দুস, হাটহাজারী মাদরাসার সহকারী শিক্ষাসচিব মাওলানা আনাস মাদানী, তাবলিগের শুরা সদস্য মাওলানা উমর ফারুক ও মাওলানা রবীউল হক, শাইখ জাকারিয়া ইসলামিক রিসার্চ সেন্টারের পরিচালক মাওলানা মিযানুর রহমান সাঈদ, হাটহাজারীর মুফতী কেফায়াতুল্লাহ, মাওলানা মুফতী মোহাম্মাদ আলী (আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসউদের প্রতিনিধি), ভারত সফরকারী প্রতিনিধি দলের সদস্য জামিয়া রাহমানিয়ার প্রিন্সিপাল মাওলানা মাহফুজুল হক।

উল্লেখ্য, গত বছরের ২৯শে অক্টোবর রোববার রাতে বাংলাদেশ সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জনাব আসাদুজ্জামান খান কামালের ধানমন্ডির বাসায় দেশের শীর্ষ আলেম, কাকরাইলের শুরা সদস্য এবং উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে কাকরাইলের মারকাযের পক্ষ থেকে অংশ গ্রহণ করেন মাওলানা যোবায়ের আহমদ, মাওলানা রবিউল হক, মাওলানা ফারুক সাহেব, প্রকৌশলী সৈয়দ ওয়াসিফুল ইসলাম, মোহাম্মদ খান শাহাবুদ্দীন নাসিম, অধ্যাপক ইউনূস শিকদার ও মাওলানা মোশাররফ হোসাইনসহ শুরার অন্যান্য সাথীগণ।

উলামায়ে কেরামের পক্ষ থেকে অংশ নেন বাংলাদেশ কওমি মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড বেফাকের সিনিয়র সহ-সভাপতি আল্লামা আশরাফ আলী, মজলিসে দাওয়াতুল হক বাংলাদেশের আমির ও গুলশান আজাদ মসজিদের খতিব আল্লামা মাহমূদুল হাসান, ফরিদাবাদ জামিয়ার মোহতামিম মাওলানা আবদুল কুদ্দুস, মারকাযুদ দাওয়ার মাওলানা আবদুল মালেক, মাওলানা উবায়দুল্লাহ ফারুক, মাওলানা মাহফুজুল হক প্রমুখ।

বৈঠকের বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের অন্যতম ছিল সংকট সমাধান হওয়ার আগ পর্যন্ত জোড় ও ইজতেমায় মাওলানা সা’দ কান্ধলভি আসবেন না। কিন্তু সারাদেশের উলামাদের ঐক্যমত্যকে উপেক্ষা করে এবং বৈঠকের সিদ্ধান্তকে পাশ কাটিয়ে মাওলানা সা‘দ গতকাল ঢাকায় আসেন। খবর পেয়ে রাজধানীর যাত্রাবাড়ির বেফাক কার্যালয়ের সামনে জরুরি সভায় মিলিত হন উলামায়ে কেরাম। বেলা ১১টা নাগাদ প্রায় অর্ধলক্ষ লোকের উপস্থিতিতে বিক্ষোভ সমাবেশ হয়, জামিয়া মাদানিয়া দারুল উলুম মাদানিয়া যাত্রাবাড়ী মাদরাসার মুহতামিম তাবলিগের উপদেষ্টা কমিটির মুরুব্বী আল্লামা মাহমুদুল হাসান, বেফাকের সহ-সভাপতি আল্লামা আশরাফ আলী, বেফাকের মহাসচিব ফরিদাবাদ মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস, জামিয়া রাহমানিয়ার প্রিন্সিপাল মাওলানা মাহফুজুল হক প্রমূখ উলামা এসময় উপস্থিত ছিলেন। এরপর বিমানবন্দর ঘেরাওয়ের ঘোষণা দেওয়া হয়। কওমি মাদ্রাসার ছাত্র এবং তাবলীগের একটি অংশ শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ঘেরাও করে। দুপুর ১২টায় তিনি বিমানবন্দরে পৌছান। অবরোধের মুখে তিনঘণ্টা পর পুলিশি প্রহরায় তাকে কাকরাইল মসজিদে নিয়ে যাওয়া হয়। কাকরাইলে বাড়তি পুলিশি নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছে। জানা গেছে, উলামায়ে কেরাম সা’দের ইজতেমায় অংশগ্রহণ না করার আশ্বাস পেয়ে অবস্থান কর্মসূচি তুলে নেন এবং যে কোনও মূল্যে সা’দকে ইজতেমায় অংশ নেওয়া থেকে বিরত রাখার সিদ্ধান্ত নেন। রাতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়ে দেন, “তাবলীগের দ্বন্দ্ব তারাই সুরাহা করুক।”

সা’দের কিছু উল্লেখযোগ্য বিতর্কিত মন্তব্য, যেসব বক্তব্যের সত্যতা বিষয়ে দেওবন্দ নিশ্চিত হতে পেরেছে।

১. হজরত মুসা (আ:) নিজ কওম এবং জামাতকে ছেড়ে দিয়ে আল্লাহর সঙ্গে কথা বলতে চলে গিয়েছিলেন৷ যার ফলে বনি ইসরাঈলের ৫ লাখ ৮৮ হাজার মানুষ পথভ্রষ্ট হয়ে গিয়েছিল৷

২. বর্তমানে মানুষ তওবার ৩ টি শর্ত মনে রেখেছে৷ ৪র্থ শর্ত আজ সবাই ভুলগেছে৷ তা হলো ‘খুরুজ’ (তাবলিগের কাজে বের হওয়া৷)

৩. হেদায়েতের জায়গা একমাত্র মসজিদ৷ যে প্রতিষ্ঠানগুলোতে দ্বীনি শিক্ষা দেয়া হয় আল্লাহর কসম সেগুলোর যদি মসজিদের সাথে সম্পর্ক না থাকে তাহলে সেখানেও দ্বীন নেই৷ দ্বীনি শিক্ষা হবে কিন্তু দ্বীন হবে না৷

৪. পারিশ্রমিক নিয়ে ধর্মীয় শিক্ষা দেয়া মানে ধর্মের সাথে ঠাট্টা করা৷ যিনা-ব্যভিচারকারীরা দ্বীন শিক্ষা দিয়ে বেতন গ্রহণকারীদের আগে জান্নাতে প্রবেশ করবে৷

৫. “আমার মতে, ক্যামেরা বিশিষ্ট মোবাইল পকেটে রেখে নামাজ হয় না৷ যত মুফতির ফতোয়াই সংগ্রহ কর না কেন মোবাইল থেকে কুরআন শোনা, কুরআন পড়ার মধ্য দিয়ে কুরআনকে অপমান করা হয়৷ এতে গোনাহ হবে৷ কোন সাওয়াব মিলবে না৷”

যেসব উলামা এ ব্যাপারে বৈধতার ফতোয়া দেয় তারা উলামায়ে সূ (বর্জনীয় আলেম)। তাদের মন ও মগজ ইহুদি-খ্রিস্টানদের দ্বারা প্রভাবিত৷ তারা সম্পূর্ণ জাহেল উলামা৷ আমার মতে তাদের অন্তরে আল্লাহর কালামের কোন মুহাব্বত নেই৷ আমি এ কথা এজন্য বলছি যে, আমার থেকে বড় এক আলেম বলেছে, ‘এমন বলাতে কোন সমস্যা নেই৷’ আমি বলেছি, সে আলেমের হৃদয়ে কুরআনের বিন্দু মাত্র ভালোবাসা নেই৷ যদিও তার পুরো বুখারী শরীফ মুখস্ত থাকুক না কেন৷ বুখারী তো কত অমুসলিমেরও মুখস্ত থাকে৷

৬. প্রত্যেক মুসলমানের ওপর কুরআনকে বুঝে পড়া ওয়াজিব, ওয়াজিব, ওয়াজিব৷ যে ব্যক্তি এ ওয়াজিব ত্যাগ করবে তার ‘ওয়াজিব তরকে’র গোনাহ হবে৷

৭. আশ্চর্য! আমাকে জিজ্ঞেস করা হয় ‘আপনার এসলাহি সম্পর্ক কার সাথে?’ তারা কেন এটা বলে না, আমার সম্পর্ক এই কাজের সাথে, দাওয়াত (ও তাবলিগে)-এর সাথে! আমি ওই ব্যক্তিদের নিয়ে বড়ই চিন্তিত যারা বলে, তাবলিগের ‘ছয় নম্বর’ পুরো দ্বীন নয়!