বলিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী প্রিয়াঙ্কা চোপড়া মনে করেন, তার জীবনের সবচেয়ে বড় অর্জন ভয়কে জয় করা। ৩৫ বছর বয়সী এই অভিনেত্রীর জীবনে বড় দুঃখ তার বাবা অশোক চোপড়ার সাথে আরও বেশি সময় কাটাতে না পারা। উল্লেখ্য, অশোক চোপড়া দীর্ঘদিন ক্যান্সারের সাথে লড়াই করার পর ২০১৩ সালে মৃত্যুবরণ করেন।
“নিজের দূর্বলতাকে আমি শক্তির জায়গা হিসেবে তৈরী করি এবং আমি মনে করি এটাই আমার জীবনের সবচেয়ে বড় অর্জন। আমি সাধারণত খুব বেশি ইমোশনাল।” পেঙ্গুইন প্রকাশনী থেকে বের আয়োজিত ‘পেঙ্গুইন এনুয়াল লেকচার ২০১৭’ অনুষ্ঠানে বক্তা হিসেবে প্রিয়াংকা চোপড়া এসব কথা বলেন। তার আলোচনার বিষয়বস্তু ছিল ‘ব্রেকিং দ্যা গ্লাস সিলিং: চেজিং আ ড্রিম।’
বলিউড থেকে হলিউডে পদার্পণ, সমাজ সেবামূলক কাজের সাথে নিজের সম্পৃক্ততা নিয়ে কথা বলেন তিনি। প্রিয়াংকা চান নতুন প্রজন্মের কাছে নিজেকে রোল মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে।
ভারতের উত্তর প্রদেশের ‘আর্মি স্কুল’ থেকে উঠে আসা লাখো ভক্তের হৃদয়ের স্পন্দন এই অভিনেত্রী বলেন, ‘উত্তর প্রদেশ থেকে উঠে এসে যদি আমি পারি, তাহলে সবাই পারবে। আমি আসলে রিপ্রেজেন্ট করি সেইসব মানুষকে যারা আমার উপর বিশ্বাস রেখেছেন।’
“আমার কাছে টাকা-পয়সা কিংবা গাড়ি-বাড়ির চেয়ে স্বপ্ন বাস্তবায়ন বেশি প্রাধান্য পায়”
জনপ্রিয় টিভি সিরিয়াল ‘কোয়ান্টিকো’তে অভিনয়ের মাধ্যমে হলিউডের বর্ণিল র্ণ্জিৎগতে অভিষেক ঘটে প্রিয়াংকা চোপড়ার। ২০১৭ তে তিনি অভিনয় করেন ‘বেওয়াচ’ ছবিতে। “আমার কাছে টাকা-পয়সা কিংবা গাড়ি-বাড়ির চেয়ে স্বপ্ন বাস্তবায়ন বেশি প্রাধান্য পায়” বক্তৃতার এক পর্যায়ে প্রিয়াংকা বলেন।
“আমার কাছে টাকা-পয়সা কিংবা গাড়ি-বাড়ির চেয়ে স্বপ্ন বাস্তবায়ন বেশি প্রাধান্য পায়”ফোর্বস ম্যগাজিন ২০১৭ এর সেরা ইন্ডিয়ান তারকাদের মধ্যে প্রিয়াংকার স্থান সেরা দশের মধ্যে। তিনিই একমাত্র নারী অভিনেত্রী যিনি এই তালিকায় প্রথম দশের ভিতরে আছেন। প্রিয়াংকা বলেন, “আমি সোনার চামচ মুখে নিয়ে জন্মাইনি, বরং আজকের এই জায়গায় আসতে প্রতিনিয়ত আমাকে কঠোর পরিশ্রম করতে হয়েছে।” নিজের অবস্থান নিয়ে তিনি খুশি হলেও একই সাথে মর্মাহত অন্য কোন নারী অভিনেত্রী ফোর্বস এর তালিকায় না থাকায়।
গ্লাস সিলিং (ক্যারিয়ারে অপ্রত্যাশিত বাধা যা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে নারী এবং মাইনরিটি মানুষদের মোকাবেলা করতে হয়) সম্পর্কে প্রিয়াংকা বলেন, এটা শুধুমাত্র ইন্ডিয়ার সমস্যা না। বরং এটা সমগ্র বিশ্বের একটি সমস্যা। ‘জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই আমাদের ‘গ্লাসসেইলিং’ অতিক্রম করতে হয়, এটা শুধুমাত্র বিনোদন জগতের সমস্যা নয় ’তিনি মন্তব্য করেন।
বর্ণবৈষম্য নিয়ে নিজের ক্ষোভ প্রকাশ করে প্রিয়াংকা বলেন, ‘এখনও বিশ্বের সব জায়গায় বর্ণবৈষম্য বিরাজ করে। এমনকি হলিউডে দক্ষিণ এশিয়ার অভিনেতাদের পার্শ্বচরিত্র হিসেবেই দেখা হয়’। স্কুল জীবনেও বর্নবৈষম্যের শিকার হয়েছেন বলে তিনি মন্তব্য করেন।