ব্রাদারহুডের সাথে আমাদের কোন সম্পর্ক নেই – হামাস প্রতিষ্ঠাতা সদস্য আল ইয়াজুরি

ব্রাদারহুডের সাথে আমাদের কোন সম্পর্ক নেই – হামাস প্রতিষ্ঠাতা সদস্য আল ইয়াজুরি

ড. ইব্রাহিম ফারেস আল ইয়াজুরি ১৯৪০ সালে ফিলিস্তিনের বাইত দারাজ (Beit Daras) নামক গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৪৮ সালে তিনি তার পরিবারসহ জায়নিস্ট-দুর্বৃত্তদের হাত থেকে পরিবারসহ পালিয়ে আশদুদ আসেন। সেখান থেকে পরে দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসের কাছে আল মাজদাল গ্রামে চলে আসেন। তরুণ আল ইয়াজুরি সেখানের রিফিউজি ক্যাম্পে বেড়ে ওঠেন এবং জাতিসংঘ পরিচালিত স্কুলেই প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহন করেন। ১৯৬০ তিনি ওষুধশাস্ত্রে উচ্চশিক্ষার জন্য মিশরে যান এবং সেখানে মুসলিম ব্রাদারহুডের রাজনীতিতে যুক্ত হন। পাঁচ বছরের মধ্যেই সেখানে তিনি শীর্ষস্থানীয় নেতা হয়ে উঠেন। শিক্ষা সমাপ্ত করে তিনি আবার গাজায় ফিরে আসেন। গাজায় তিনি নিজে ফার্মাসি প্রতিষ্ঠা করেন এবং অন্যান্য ব্রাদারহুড নেতাদের নিয়ে মিশর নিয়ন্ত্রিত স্বাধীন অঞ্চলের কাজ শুরু করেন।

১৯৬৭ সালের ৬ দিনের যুদ্ধের পর গাজা এবং সিনাই উপত্যকা ইজরাইলী দখলদারীত্বের কবলে পড়লে ফিলিস্তিনি ব্রাদারহুড তার মূল সংগঠন থেকে আলাদা হয়ে স্বাধীন লড়াইয়ে নেমে পড়ে। তারা ইজরাইলী দখলদারীত্বের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রস্তুতি গ্রহন করতে থাকে। এর বিশ বছর পর ১৯৮৭ সালের ডিসেম্বরে ইয়াজুরি এবং তার সহকর্মীরা এক নবজাগরণের সুচনা করেন যা প্রথম ইন্তেফাদা(নবজাগরণ) নামে পরিচিত এবং একই সময় তারা ইসলামী ভাবধারায় প্রতিরোধ আন্দোলন ‘হামাস’ প্রতিষ্ঠা করেন। মিডেল ইস্ট মনিটরে সম্প্রতি ছাপা হয় হামাসের অন্যতম এই প্রতিষ্ঠাতার একটি স্বাক্ষাতকার। জবানের জন্যে সেটি অনুবাদ করেছেন শোয়েব আব্দুল্লাহ।

হামাস প্রতিষ্ঠার প্রেক্ষাপট কি ?

ড. ইব্রাহিম ফারেস আল ইয়াজুরিঃ আমরা ইজরাইলী দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য হামাস প্রতিষ্ঠা করেছিলাম। কারন তারা একে একে আমাদের ফিলিস্তিন দখল করে নিচ্ছিলো, আমাদের ঘর-হারা করেছিলো এবং আমাদের গ্রাম-শহর নিশ্চিহ্ন করে হত্যা-রাহাজানি করে আমাদের বাড়িঘর নিজেদের দখলে নিয়ে যাচ্ছিল।

 

কিভাবে আপনারা এই আন্দোলনটি প্রতিষ্ঠা করলেন?

আল ইয়াজুরিঃ সে উত্তর দিতে হলে আমাদের ফিরে যেতে হবে ১৯৬৭ সালে। ৬ দিনের আরব-ইজরাইল যুদ্ধের ঠিক পরে ইজরাইল পূর্ব-জেরুজালেম, পশ্চিম-তীর, গাজা এবং সিনাই উপত্যকা দখল করে নেয়। তখন গাজায় মুসলিম ব্রাদারহুডের আমরা কয়েকজন একসাথে মিলিত হই এবং সেখানে সিদ্ধান্ত হয় আমাদের এই দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে। শায়েখ আহমেদ ইয়াসিন (হামাস প্রতিষ্ঠাতা) প্রথমে আমাদের সামরিক অভিযান পরিচালনার পরামর্শ দেন। কিন্তু অন্য অনেকেই মুসলিম ব্রাদারহুডের হয়ে সদস্য-সংগ্রহ এবং জনভিত্তি প্রতিষ্ঠা করে তারপর ইজরাইলী দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করার পক্ষে মত দেন। এরই মধ্যে ইজরাইল নতুন দখলকৃত এলাকায় ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে উস্কানি এবং অসন্তোষ বাড়াতে থাকে। এমনকি মিশরের সাথে শান্তি চুক্তি এবং সিনাই উপত্যকা থেকে তাদের কতৃত্ব সরিয়ে নেয়া পরেও এসব চলতে থাকে। ব্যাপারটি সীমা ছাড়িয়ে যায় যখন একজন ইজরাইলী ট্রাক ড্রাইভার ফিলিস্তিনী শ্রমিকদের উপর গাড়ি উঠিয়ে দিয়ে চারজন শ্রমিক হত্যা করে।

এই ঘটনা ফিলিস্তিনি জনগনের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের জন্ম দেয় এবং তখনি অনুভব করি আমরা একটা গনজাগরণ তৈরী করার জন্য প্রস্তুত। আমরা আমাদের সাথীদের নিহত চার শ্রমিকদের জানাজায় যতটা সম্ভব মানুষ জড়ো করে পাথর বা বোতলসহ যার কাছে যা আছে তাই নিয়ে দখলদার ইজরাইলী বাহিনীর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর জন্য উদ্বুদ্ধ করতে বলি। তার কিছুদিন পরে আমরা শায়েখ ইয়াসিনের বাড়িতে মিলিত হয়ে নিজের মধ্যেই ইসলামিক প্রতিরোধ আন্দোলনের ঘোষনা দেই  যা প্রথমে ‘হামস’ এবং পরে হামাস নামে পরিচিত হয়। হামাস মানে হচ্ছে ‘উদ্দীপনা’। এ বিষয়ে আমরা আমাদের প্রথম বিবৃতি প্রদান করি যেটা ছিল এই গনজাগরনেরই প্রথম কোনো ঘোষনা; যেটি ‘পাথরের ইন্তিফাদা’ বা ‘মসজিদের ইন্তেফাদা’ নামে পরিচিত।

 

মুসলিম ব্রাদারহুডের সাথে কি আপনাদের কোনো ধরনের সম্পর্ক আছে ?

আল ইয়াজুরিঃ সাংগঠনিক ভাবে মিশরীয় মুসলিম ব্রাদারহুডের সাথে কিংবা অন্য কারো সাথে আমাদের কোন ধরনের সম্পর্ক নেই। শুধুমাত্র আদর্শিক জায়গা থেকে আমাদের সাথে তাদের সম্পর্ক ছিলো। আমাদের দুটো আন্দোলনই ইসলামী আন্দোলন এবং আমরা এই জমিনে যেকোনো বিদেশি দখলদারীত্ব হটানোর জন্যে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছি। যাই হোক, ভৌগলিক এবং রাজনৈতিক অবস্থা বিবেচনায় আমাদের প্রত্যেকেরই আলাদা লক্ষ্য-উদ্দেশ্য আছে। আমরা যখন হামাস প্রতিষ্ঠা করেছিলাম তখন এটাকে মুসলিম ব্রাদারহুডের সশস্ত্র শাখা হিসেবেই প্রতিষ্ঠা করেছিলাম। হামাস প্রতিষ্ঠার অনেকদিন পর্যন্ত আমরা মুসলিম ব্রাদারহুডের নামেই কিছু কার্যক্রম পরিচালনা করেছি।

 

আপনাদের লড়াইয়ের উপায় আর উদ্দেশ্য কি ছিল?

আল ইয়াজুরিঃ আমাদের হাতিয়ার ছিলো পাথর-টায়ার-ধর্মঘট এবং ইজরাইলি পন্য বর্জন করা। তারপর আমরা আমাদের নীতিতে পরিবর্তন আনি। তিনবার ইজরাইলী হামলার পর ও আমরা রাজনৈতিক এবং সামাজিক ভাবে নিশ্চিহ্ন না হয়ে টিকে থাকার সক্ষমতা অর্জন করতে পেরে ছিলাম। আমাদের উদ্দেশ্য ছিলো এবং এখনো আছে ইজরাইলী দখলদারীত্বে মুক্ত করে আমাদের আপন জমিনে ফিরে যাওয়া, আমাদের বাড়িতে। যেখান থেকে আমাদের বিতাড়িত করা হয়েছিলো।

 

কেনো আপনারা ইজরাইলের বিরুদ্ধে লড়াই করছেন?

আল ইয়াজুরিঃ কারন তারা আমাদের জমিন দখল করেছে , আমাদের অনেককে হত্যা করেছে, ১৯৪০ সাল এবং এরপরে আমাদের নিজেদের ভূমি থেকে আমাদের বিতাড়িত করেছে।

 

আপনি কি ইজরাইলী এবং ইহুদিদের মধ্যে কোন পার্থক্য দেখেন?

আল ইয়াজুরিঃ অবশ্যই দেখি। ইজরাইল যাদের আমরা জায়নিস্ট বলতে পারি তারা আমাদের ভুমি দখল করেছে এবং আমাদের অধিকার হরন করেছে। এখনো তারা আমাদের উপর নির্মম অত্যাচার করছে। কিন্তু যারা ইহুদি, এই ধর্ম পালন করে আমরা তাদের শ্রদ্ধা করি। আমরা কোনো ইহুদিকেই শত্রু ভাবিনা। কিন্তু দুনিয়ায় যেই প্রান্তে জায়নিস্ট থাকুক এবং ইহুদি হোক বা না হোক যারা জায়নিজমের সাথে যুক্ত, আমরা তাদের শত্রু ভাবি। কেননা, সেই জায়নিজম কোন অর্থেই ইহুদীবাদ নয়।

 

কোনো একদিন যদি আপনারা স্বাধীন-ফিলিস্তিন পান, সেখানে কি ইহুদীরা থাকার সুযোগ পাবে??

আল ইয়াজুরিঃ অবশ্যই সুযোগ পাবে। আমরা ইহুদীদেরকে আমাদের সাথে বসবাস করার অনুমতি দেবো যদিও তারা লক্ষাধিক হয়। ইহুদিদের নিয়ে আমাদের কোনো সমস্যা নেই। আপনি যদি ইতিহাসের দিকে তাকান তাহল দেখবেন ইহুদিরা আমাদেরদের সাথে একত্রে বসবাস করেছে, এমনকি ইসলামী শাসনের অধীনেও। ইজরাইল ফিলিস্তিন দখলের আগে বিপুল সংখ্যক ইহুদি ফিলিস্তিনি বসবাস করতো যেমন করে বাকি আরব এবং মুসলিম দেশে বাস তারা করছে।

 

ফিলিস্তিন-ইজরাইল সংঘাত নিয়ে হামাসের কি কোনো প্রস্তাব  আছে যা মধ্য দিয়ে কোন সমাধানে পৌছানো যায়?

আল ইয়াজুরিঃ হ্যা অবশ্যই আছে। শুরুর দিকেই শায়েখ আহমেদ ইয়াসিন এই সংঘাত সমাধানের জন্য একটি প্রস্তাব রেখেছিলেন, যাকে বলা হয় ‘হুদনা’। এই প্রস্তাবমতে, ইজরাইল শত্রুতা ছেড়ে ১৯৬৭ সালের নির্ধারিত সীমান্ত-আইন মেনে নিতে হবে, তবে তাতে যেন ফিলিস্তিনিদের অধিকার খর্বিত না হয় কিংবা ইজরাঈলের স্বীকৃত চাওয়া না হয়।

 

অসলো চুক্তির ফলে হামাসের উপর সেটির কি প্রভাব পড়েছিল?

আল ইয়াজুরিঃ হামাস আসলো চুক্তি কিংবা এর ফলাফল কোনোটিকেই স্বীকৃতি দেয় না। আমরা এটিকে ফিলিস্তিনের মুক্তি সংগ্রাম এবং ইন্তিফাদাকে ছোট করে দেখার যোগসাজশ বলেই মনে করি। একইভাবে ফিলিস্তিনি সরকার যখন গঠিত হয় এবং দখলকৃত ফিলিস্তিনি এলাকার উপর তারা কর্তৃত্ব স্থাপন করে উল্টো আমাদের বিরুদ্ধেই লড়াই শুরু করে। তারা আমাদের বহু নেতাকে গ্রেফতার করে কিন্তু আমরা সিদ্ধান্ত নেই এর জবাব আমরা দেবো না। এমনকি তাদের অত্যাচারে আমাদের অনেকে মৃত্যুবরণ পর্যন্ত করে। আমরা তখন স্লোগান তুলি, আমাদের বন্দুকের নল কোনো ফিলিস্তিনিদের দিকে তাক করা নেই। ২০০৭ সাল,  নির্বাচনে জয়লাভের পরের বছর আমরা নিশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়া থেকে ঘুরে দাড়াই। ফিলিস্তিনি প্রশাসন যখন বুঝতে পারে আমাদের গাজা থেকে নিশ্চিহ্ন করা সম্ভব নয়। ফলে তারা তখন ইজরাইলী অবরোধের দোসর হয়ে উঠে।

 

ইজরাইল এবং ফিলিস্থিনি প্রশাসন থেকে কি প্রতিক্রিয়া এসেছিলো হামাসের উপর?

আল ইয়াজুরিঃ হামাস প্রতিষ্ঠা হবার কিছু সপ্তাহ পরে শায়েখ আহমেদ ইয়াসিন বাদে হামাসের সকল নেতাদের ইজরাইলী দখলদার বাহিনী গ্রেফতার করে। তারও দুই বছর পর যখন দখলদার বাহিনী লক্ষ করলো হামাস এরপরও ক্রমাগত ছড়িয়ে পড়ছে। তখন তারা শায়েখ আহমেদ ইয়াসিন এবং হামাসের নতুন নেতাদেরও গ্রেফতার করতে শুরু করে। ১৯৯০ সালের দিকে হামাস যখন পাথর আর ছুড়ি বাদে বন্দুকের ব্যবহার শুরু করে, তখন বিপুল সংখ্যক হামাস-কর্মীকে গ্রেফতার করে দক্ষিন লেবাননের মার্জ-আল -জুহুর নামক স্থানে নির্বাসন দেয়া হয়। ফিলিস্তিনি প্রশাসন ইজরাইলের অনুকরনে একইভাবে আক্রমন করে শায়েখ আহমেদ ইয়াসিন সহ অনেক হামাস নেতাদের হত্যা করে। তারা কাসসাম ব্রিগেডের অনেক নেতাদের হত্যা করে। যেটি হামাসের সশস্ত্র-বাহিনী হিসেবে কাজ করছিলো। হামাস এত আক্রমনের মধ্যেও ঠিকে থাকতে সক্ষম হয়েছে এবং প্রত্যেকবার দেশের ভিতরে এবং বাহিরে প্রচুর কর্মী-সমর্থকদের আকর্ষন করতে সক্ষম হয়েছে। এখনো বর্তমানে দুনিয়াজুড়ে আমাদের অনেক শুভাকাঙ্ক্ষী যারা মুসলিম পর্যন্ত নয়। কিছু দেশ আছে যারা ইজরাইলকে সমর্থন দিচ্ছে সেখানে আমাদের বন্ধুরা তাদের সরকারে বিরুদ্ধে দাঁড়াচ্ছে এবং ইজরাইল- ফিলিস্তিনি সংঘাতের ব্যাপারে গ্রহনযোগ্য সমাধানের রাস্তা খুজে বের করার আহবান করছেন।

 

সুইসাইড-বোম্বিং বা আত্মঘাতী-হামলা কি আপনাদের সংগঠনের জন্য বদনাম বয়ে আনছেনা?

আল ইয়াজুরিঃ যাদের টার্গেট ফিলিস্তিন নয়, তাদের উপর হামলা করার চিন্তা হামাস কখনো করেনি, করবেও না। দেখুন, ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ইজরাইলের অত্যাচার বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং সেটি অসহনীয় মাত্রায় পৌছে গেছে। অপরদিকে ইজরাইলী এবং ফিলিস্তিনি প্রশাসনের প্রতিরক্ষা চুক্তির দ্বারা সকল বিপ্লবী লড়াইকে অবমূল্যায়ন করছে। এর ফলে হামাসের সশস্ত্র বাহিনী ফিলিস্তিন-আগ্রাসনের বিরুদ্ধে এই ধরনের বোম্বিং করতে বাধ্য হচ্ছে। যদিও ইজরাইলী দখলদাররা আমাদের সিভিলিয়নদের ব্যাপারে চিন্তা করে না। কিন্তু আমরা কখনোই ইজরাইলিদের যুদ্ধনীতি অনুসরণ করিনা। কিন্তু শুধু আমাদের জন্য না, এই সত্যি সবার জানা যে ইজরাঈল ফিলিস্তিনী-সাধারণ নাগরিকদের বুকের মধ্যে চেপে বসেছে এবং তারা এই সাধারণ মানুষদের টার্গেট করেছে। তবে এখন আমাদের লড়াইয়ের নতুন নতুন তরিকা প্রস্তুত আছে, এখন আর আমরা এসব আত্মঘাতী হামলা করবনা। যেগুলো হয়েছে সেসব পুরানো অতীত, আজ আর আমরা সেখানে নেই।

 

হামাসের মূলনীতিতে পরিবর্তন এলো কেন?

আল ইয়াজুরিঃ আমরা আমাদের কোন নীতি পরিবর্তন করিনি। আমরা শুধু আমাদের চিন্তার কিছু অংশ পরিস্কার করে প্রকাশ করেছি যেগুলো নিয়ে নানাভাবে বিভ্রান্তি তৈরী করা হয়েছিল। যেমন ইহুদিদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের বিষয়টা। আমরা পরিস্কার করে ইহুদি এবং জায়নিস্টদের বিষয়টি আলাদা করেছি এবং বর্তমানে ফিলিস্তিনিদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়কে প্রাধান্য দেয়ার নীতি গ্রহন করেছি।

 

জন্ম থেকে আজ অবধি হামাসের এই ত্রিশ বছরে অর্জন কি?

আল ইয়াজুরিঃ হামাসকে নির্মুল  করে দিতে ইজরাইল এবং নানামুখী দেশি-বিদেশী চক্রান্ত থাকা সত্ত্বেও হামাস তার লড়াইকে জারি রেখেছে। ফিলিস্তিনিদের অধিকারের জন্য আজ ও হামাস লড়ে যাচ্ছে। যারা ইজরাইলী হামলায় আজ ঠিকানাহীন, হামাস তাদের মনে বেচে থাকার নতুন অনুপ্রেরণা জাগিয়েছে। দুনিয়াজুড়ে হামাস আজ আলোচনায় এসেছে, তাই সবাই আজ ফিলিস্তিনিদের দিকে নজর রাখসে। সেটা শুধু সশস্ত্র লড়াই জারি রাখার মাধ্যমেই নয় দুনিয়া-জুড়ে মিত্র তৈরী করার মাধ্যমেও হামাস আজ সবার নজরে। তারা ফিলিস্তিনের নতুন প্রজন্মকে বোঝাচ্ছে যে জায়নিস্টরা আমাদের জমিন ছিনিয়ে নিয়েছে, তারা কখনোই আমাদের বন্ধু হতে পারে না। হামাস সাথে সাথে ইহুদী থেকে জায়নিস্টদের পার্থক্য করাও শেখাচ্ছে। হামাসের নীতি ফিলিস্তিনের নীতি, সেটি তারা কখনোই পরিবর্তন করেনি। এটাই হামাসের ত্রিশ বছরের প্রাপ্তি।

 

তাহলে হামাস শেষমেশ যাচ্ছে কোথায়?

আল ইয়াজুরিঃ হামাস ফিলিস্তিনিদের জমিন উদ্ধার করে তাদের স্বাধীনতা ফিরিয়ে দেয়ার জন্য লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে।